নিজস্ব প্রতিবেদক ::
দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দুর্ভিক্ষের আলামত দেখতে পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘দেশের চলমান এই সংকট নিরসনে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ ভোটের অধিকার ফিরে পেলে সব সমস্যার সমাধান হবে। আর দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে মানুষ কাউকে ছেড়ে দেবে না।’
শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘আজকে প্রায় অসংখ্য গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, মানুষ কর্মহীন হচ্ছে। মানুষ যদি খাবার কিনতে না পারে তাহলে কিন্তু দুর্ভিক্ষের আলামত তৈরি হবে এবং এই আলামত তৈরি হলে কেউ-ই কিন্তু রেহাই পাবে না। আর হাততালি দেবে ওই পতিত ফ্যাসিস্টরা।’
তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের কলকারখানা যেন বন্ধ না হয়। কারণ অর্থনীতির কঠিন করুণ অবস্থা। জনগণ মনে করে সামনে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে দেশে দুর্ভিক্ষ হয় কি না? কর্মসংস্থান বৃদ্ধি না করতে পারলে জনগণ কিন্তু ছেড়ে দেবে না। এতে প্রকৃত গণতন্ত্রের চর্চা মুখ থুবড়ে পড়বে এবং আমরা একটা দীর্ঘস্থায়ী অগণতান্ত্রিক শক্তির কাছে জিম্মি হয়ে পড়ব।’
রিজভী বলেন, ‘যে দোসররা ব্যাংকের হাজার কোটি টাকা মেরে বিদেশে পাচার করেছে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রশাসক নিয়োগ করে চালাতে পারে সরকার। গার্মেন্টসগুলো যেন বন্ধ না হয় সরকার এটাকে নানাভাবে টেকওভার করতে পারে। দোসররা থেকে থাকলে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। এখনও ফ্যাসিবাদের দোসররা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছে। যারা সুযোগ পেলেই আবারও ফুঁসে উঠবে।’
সংস্কারের নামে জনগণকে বিভ্রান্ত না করে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘বিএনপি সংস্কারবিরোধী নয়। বিএনপি চায় সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন ও গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা। আপনারা যে সংস্কারের কথা বলছেন বিএনপির ৩১ দফার মধ্যে প্রায় সবই প্রতিফলিত হয়েছে। জুলাই সনদদের অনেক বিষয় বিএনপি গ্রহণ করেছে। কিন্তু এটি মূলনীতির মধ্যে নিতে হবে কেন? সমাজ এবং রাষ্ট্র যখন গণতন্ত্রের স্বার্থে, রাষ্ট্রের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে তখনই সংস্কার করে সেই আইন প্রণয়ণ হবে। এটাই তো গণতান্ত্রিক সংবিধানের নিয়ম।’
তিনি বলেন, ‘জনগণের সরকার ক্ষমতায় থাকলে প্রতিটি পদে পদে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয়, সেই জবাবদিহিতা এখন নেই। আমরা মানবিক সাম্য ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করেছি। আমরা আইনের শাসনের জন্য লড়াই করেছি। যার জন্য দরকার প্রকৃত গণতন্ত্র। যেখানে জনগণের মালিকানা জনগণ ফিরে পাবে। সেই মালিকানা আটকে রাখা তো বড় ধরনের ফ্যাসিবাদকে প্রশ্রয় দেওয়া।’
পরে জিয়া পরিষদের উদ্যোগে সংগঠনের সভাপতি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল কুদ্দুসের রোগ মুক্তি কামনায় দুস্থদের মাঝে জায়নামাজ বিতরণ করেন রিজভী।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, জিয়া পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি ড. শফিকুল ইসলাম, মহাসচিব ড. এমতাজ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আব্দল্লাহহিল মাছুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম, সদস্য সচিব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন জিয়া পরিষদ ডেসকো শাখা, যুগ্ম আহ্বায়ক শামসুল প্রমুখ।